চুপ থাকেন, কিছুই ঠেকাতে পারবেন না

Tweet

PM of Hasinaদৈনন্দিন ডেস্ক:
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, “সহিংসতা চালিয়ে নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এখন চুপ থাকেন। কোনো কিছুই ঠেকাতে পারবেন না।” মঙ্গলবার রাতে গণভবনে ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, “কেউ কেউ জাল ভোটের কথা বলে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেয়েছেন। যারা গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা চান না, তারাই এসব কথা বলছেন।” খালেদা জিয়ার উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “মানুষকে যন্ত্রণা দেবেন না। নির্বাচনই যখন আটকাতে পারেননি তখন আর কিছুই আটকাতে পারবেন না।”
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি হয়তো ভেবেছিল বাধা দিয়ে একটা সাংবিধানিক ক্রাইসিস তৈরি করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করবে। কিন্তু জনগণ তাদের সে সুযোগ দেয়নি। নির্বাচনে ৪০ ভাগ ভোট হয়েছে। অনেক উন্নত দেশে এত ভোট পড়ে না। এত বাধা অতিক্রম করেও যখন ভোট হয়েছে তখন আর কী করবেন? আমি এখন এটাই চাইব, ওনার (খালেদা) যেন একটু হুঁশ ফিরে আসে। উনি যেন জনগণকে আর কষ্ট না দেন।”
আলোচনার দরজা খোলা আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “জামায়াত আর যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গ ছেড়ে যদি আলোচনা করতে আসে, তবে আমরা আলোচনা করে আগামী দিনে কীভাবে চলা যায় সেটা আমরা দেখব। তবে হাইকোর্টে নিষিদ্ধ জামায়াতের সঙ্গ ছেড়ে আসতে হবে।”
সরকারবিরোধী সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের কড়া সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, “কিছু কিছু লোক গণতন্ত্র চাইবে না এটা আমরা জানি। যারা ভাবে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা থাকলে, গণতান্ত্রিক সরকার থাকলে তাদের কোনো মূল্য নাই। অগণতান্ত্রিক কেউ আসলে তাদের মূল্য বাড়ে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কেউ কেউ ভাববে অগণতান্ত্রিক কেউ আসলে তাদের গাড়িতে পতাকা উড়বে। তাদের ফাইভ স্টার হোটেলে বসে মিটিং করে বাংলাদেশে সর্বনাশা চিন্তা ছাড়া উচিত। ওসব জায়গায় মিটিংয়ের খবর আমাদের কাছে আছে। তাই একটু সচেতন থাকা ভালো।”
মিডিয়ার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনাদের উচিত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখে কাজ করা। অবশ্য কিছু কিছু মিডিয়ার অগণতান্ত্রিক হলেই কদর বাড়ে। প্রাইভেট চ্যানেলগুলো আমাদেরই দেয়া। এ কথাটা বেশি না বলতে গেলেই ভালো। বাংলাদেশে কেউ প্রাইভেট চ্যানেল দেয়ার সাহসই পাননি। ৯৬ সালে আমিই দিয়েছি। অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছি। মানুষের কর্মসংস্থানটা কিভাবে বাড়ে সে চিন্তাটা আমি করেছি।”
মিডিয়াকে সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “মিডিয়াকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। তারা অনেক কাজ করেছে যেটা আমাদের সহযোগিতা করেছে। আবার অনেক কাজ করেছে যেটা সন্ত্রাসে সহায়তা করেছে। আগুনের ছবি দেখিয়েছে। অনেকে আবার দিয়াশলাই দিয়েছে। সবারই একটা দেশের প্রতি দায়িত্ব আছে। একটু দৃষ্টি দিতে হবে যাতে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।”
বিএনপিকে প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে বলে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না। বিএনপি ২০০১ সালে প্রতিহিংসার রাজনীতি করেছে। সাধারণ মানুষসহ আওয়ামী লীগ ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করেছে। এখনো তাদের অভ্যাস বদলায়নি। এখন আবার তারা সংখ্যা লঘুদের ওপর হামলা করছে।” শেখ হাসিনা বলেন, “যেখানে যেখানে হামলা হচ্ছে সেখানে ব্যাপক অভিযান চালানো হবে। যারা এসবের সঙ্গে জড়িত তাদের কঠিন শাস্তি দেয়া হবে।”
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলার মানুষের প্রত্যাশা ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অব্যাহত রাখবো এবং বিচারের রায় কার্য কর করবো।” বিএনপির নেত্রীর যত রাগ ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ওপর, এমন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “এখন কিসের হরতাল-অবরোধ। এখন ‘ও’ লেভেল, ‘এ’ লেভেলের পরীক্ষা চলছে। তাদের আন্দোলনে শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”
বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মানুষ সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে ও প্রাকৃতিক বৈরী পরিবেশেও মানুষ ভোট দিয়েছে, এ জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ।” এ সময় আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply